পবিত্র রমজানে রহমত, বরকত ও নাজাত লাভের আশায় নিত্যপণ্যে দাম অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে দেয় সৌদি আরব, কাতার, ওমানসহ মধ্যপাচ্যের প্রায় সবগুলো দেশের ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, খ্রিস্টান প্রধান দেশ ইউরোপ-আমেরিকার বাজারগুলোতেও মুসলিমদের জন্য দেওয়া হয় বিশেষ ছাড়।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশের চিত্রই কেবল ব্যতিক্রম। রমজান আসার সঙ্গে সঙ্গেই পণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে নিতে ব্যস্ত থাকেন এদেশের ব্যবসায়ীরা। সরকারের নির্দেশনাকে আমলে নেওয়ার সময় নেই তাদের।
তথ্যমতে, এবার রমজান শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে ৮০০ পণ্যের দাম কমিয়েছে কাতার। আর সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে রীতিমতো মূল্য ছাড়ের প্রতিযোগিতা। দেশটির বিখ্যাত সুপারশপে মূল্য ছাড় দেওয়া হচ্ছে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত। একই চিত্র আবর-আমিরাতে। ১০ কোটি মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছাতে পণ্যের দামে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে মিশর। মুসলিম নাগরিকদের সুবিধা দিতে পণ্যের দামে বিশেষ ছাড় দিচ্ছেন ইউরোপ-আমেরিকার ব্যবসায়ীরাও। আল্লাহ কাছে ব্যবসায় বিশেষ রহমত পেতেই ভোক্তাদের কাছে প্রায় অর্ধেক দামে পণ্য বিক্রি করেন মধ্যপাচ্যের এসব ব্যবসায়ীরা।
তবে, এর ঠিক বিপরীত চিত্র বাংলাদেশে। রমজানের খরবে হু-হু করে বেগুন, শসা, টমেটো, মরিচ, ধনে পাতার সাথে এপার্ট্ম্যান্টের দামও বেড়েছে, তাও আবার প্রায় দ্বিগুণ হারে। কাজে আসছে না ব্যবসায়ী নেতা কিংবা বাণিজ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চালানো অভিযানও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এদেশের নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে ব্যবসায়ীদের অসততাই দায়ী।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন দেশকে বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি অবজ্ঞার কারণেই এই অবস্থা। আমরা মুখে মূল্যবোধের কথা বলে নামাজ পড়ছি, রোজা রাখছি কিন্তু কাজে সেটা প্রমাণিত হচ্ছে না।
তবে, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন দেশকে জানান, আমরা যারা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে মাল ক্রয় করি তারা সবাই মুসলমান নয়। তারাও এই সময়ের জন্য বসে থাকেন কীভাবে দাম বাড়াবেন।
ইসলামিক স্কলাররা বলছেন, অসাধু মজুদদার আর ভোক্তার ওপর জুলুমকারী ব্যবসায়ীদের জন্য পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের ভারপ্রাপ্ত খতিব মুহিববুল্লাহ হিল বাকী এ বিষয়ে দেশকে বলেছেন, সৎ ব্যবসায়ীদের হাশর-নশর হবে নবিদের সঙ্গে। এ ছাড়া বেশি মুনাফার জন্য দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের প্রতি আল্লাহর রাসুল অভিসম্পাত করেছেন।