নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চিনাদী বিলকে ঘিরে তৈরি হয়ে হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর চিনাদী বিল হয়ে উঠেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিলজুরে ফুটে থাকা সারি সারি পদ্মফুল দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে আসছে প্রকৃতিপ্রেমীরা।
স্থানীয় জেলা প্রশাসন এই স্থানটির নামকরণ করেছে ‘স্বপ্নচিনাদী’। শিবপুর উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে দুলালপুর ইউনিয়নে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত চিনাদী বিলটিতে যেমন রয়েছে প্রাকৃতিক রূপ, তেমনি বিলের পানিতে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছের ছড়াছড়ি। এ ছাড়া বিলের পানিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া শত শত পদ্ম ফুল বিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।
ফুটন্ত পদ্মফুলগুলো যেন প্রকৃতিকে সাজিয়েছে এক অপরূপ সৌন্দর্যে। আর এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানথেকে ভ্রমণ পিপাসু লোকজন এখানে ভিড় করছে। নৌকায় ঘুরে বেড়ানো আর বিল জুড়ে পদ্মফুলের সঙ্গে ছবি তুলে নিজেকে স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি করে রাখছেন অনেকেই।
পর্যটনশিল্পে অপার সম্ভাবনাময় হিসেবে ২০১৬ সালে জেলা প্রশাসন বিলটির নামকরণ করে স্বপ্ন চীনাদী। প্রায় ৫৫০ বিঘা আয়তনের স্বচ্ছ পানির এই বিলজুড়ে যেমন রয়েছে হাজারও মৎস্যজীবীর বিচরণ। তেমনি রয়েছে বক, চিল, মাছরাঙা, পান কৌড়ি, বালিহাঁসসহ বিভিন্ন পাখির বিচরণ ক্ষেত্র। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি চিনাদী বিল প্রতিনিয়ত হাতছানি দিয়ে ডাকে পর্যটকদের। যাতায়াত ব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ চিনাদী বিলকে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি প্রকৃতিপ্রেমীদের।
চিনাদী পদ্মবিলে ঘুরতে আসা আফজাল হোসেন নামে এক পর্যটক জানান, তিনি লোকমুখে বিলটির সৌন্দর্যের কথা শুনে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন। বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ তিনি। তবে এখানে আসার জন্য যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি প্রশস্তকরণ করাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি জানান তিনি।
মোজাম্মেল হক নামে আরেক পর্যটক জানান, বিলের পাশে ভাল কোন খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট না থাকায় পর্যটকদের খাবারের জন্য অনেকটা দূরে যেতে হয়। এ ছাড়া সরকারিভাবে বিলের পাশে গণসৌচাগার করার দাবিও জানান তিনি।
দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম জানান, চিনাদী বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসে। পর্যটক আকর্ষণের পাশাপাশি চিনাদী বিলের তীরে মৎস্য, কৃষিপণ্য আহরণ ও বিপণনের ব্যবস্থা করা গেলে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার চিত্র অনেকাংশে পাল্টাবে।