বাঁশখালীতে নুরুল কাদের নামের এক ব্যক্তিকে পুঁইছড়ি ইউনিয়ন থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে গিয়ে শেখেরখীলে ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নুরুল কাদের বাদী হয়ে শেখেরখীলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদারের সহ আটজনকে আসামী করে বাঁশখালী থানায় শনিবার (১০ জুলাই) বিকেলে মামলাটি দায়ের করা হয়। ঘটনার পরদিন থেকে নুরুল কাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত বুধবার অস্ত্র ও গুলি দিয়ে নুরুল কাদেরকে ডাকাত সাজানোর চেষ্টা হয়েছিল অভিযোগ উঠে। অস্ত্র ও গুলি দিয়ে তাকে শেখেরখীলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদারের কার্যালয়ে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে নুরুল কাদেরকে অস্ত্র ও গুলিগুলো সহ থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হলে ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে তদন্তে নামেন আনোয়ারা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হুমায়ুন কবীর ও বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবীর। তারা ঘটনার সত্যতা না পাওয়ার নুরুল কাদেরকে সেদিন রাতে ছেড়ে দেন।
ঘটনারদিন পর থেকে এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়। একটি ভিডিওতে দেখা যায় নুরুল কাদেরকে শেখেরখীলে চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদারের কার্যালয়ে তার লোকজন মারধর করছে। এ সময় হাতে অস্ত্র ও কোমরে গুলি গুঁজে দিয়ে তার ছবি তোলা হচ্ছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শী পুঁইছড়ি নয়াপাড়া নতুন মসজিদের ইমাম আব্দুর রহিম বলেন, ঘটনার শিকার নুরুল কাদেরের বাড়ি শেখেরখীল ইউনিয়নে হলেও চেয়ারম্যান ইয়াসিনের অত্যাচারে পুঁইছড়ি ইউনিয়নে এসে আশ্রয় নেয়। ঘটনার দিন নুরুল কাদের পুঁইছড়ির নয়া মসজিদ এলাকায় একটি চায়ের দোকানে শুয়ে ছিল। শেখেরখীলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদার ও তার লোকজন একটি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে নয়া মসজিদ এলাকায় আসে। চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদার সিএনজি অটোরিকশা থেকে না নামলেও তার লোকজন দোকানটিতে ঢুকে নুরুল কাদেরকে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে অটোরিকশায় তুলে শেখেরখীলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। চেয়ারম্যান বলে সম্মান দেখিয়ে আমরা কিছু বলিনি। নাহলে তাকে নিয়ে যেতে দিতাম না।
তিনি এবং স্থানীয় লোকজন বলেন, নুরুল কাদের গরীব লোক। সে তার ছেলের ফার্নিচারের দোকানে কাজ করে। তার কাছ থেকে চেয়ারাম্যানের সাথে আর্থিক সমস্যা ছিল। তাই বলে অসহায় একজন লোকজনে এভাবে মেরে তুলে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো। এটা কেমন কাজ!
এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবীর অসুস্থ থাকায় তার সাথে কথা বলা যায়নি। বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বলেন, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনায় নুরুল কাদের বাদী হয়ে শেখেরখীল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদারসহ আটজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। শেখেরখীল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন তালুকদারকে কেন আসামী করা হলো জিজ্ঞেস করলে এই কর্মকর্তা বলেন, নুরুল কাদেরকে মারধর করে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে অস্ত্র ও গুলি দেওয়ার ঘটনার কারণে চেয়ারম্যানকে আসামী করা হয়েছে। এই অস্ত্র ও গুলি কোথায় থেকে আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।