মাটিরাঙ্গার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এখন সারা দেশের চাহিদা মেটাচ্ছে পাহাড়ের কলা। এতে করে লাভবান হচ্ছে পাহাড়ের কৃষক। বেশ সুস্বাদু ও ভেজালমুক্ত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে এই অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি।
মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাহাড়ি টিলা বেয়ে কলা নিয়ে আসা হয় মাটিরাঙ্গা কলা বাজারে। মাটিরাঙ্গায় সাপ্তাহিক বাজার শনিবার হলেও শুক্রবারে কলার বাজার জমে উঠে বেশ। সেখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কলা কিনে পণ্যবাহী ট্রাকের মাধ্যমে চট্টগ্রাম,কুমিল্লা ও ঢাকাসহ সারাদেশে নিয়ে যায়।
পাহাড়ে বাংলা ও চাপা কলা (স্থানীয় নাম চম্পা কলা) নামের দুই জাতের কলার বেশ আধিক্য দেখা যায়। উঁচু পাহাড়ের মাটিতে এসব খুব ভাল জন্মায় বিধায় এগুলোকে পাহাড়ি কলাও বলা হয়।
পুষ্টিগুণ ও জনপ্রিয়তা বেশি হওয়ায় চাপা কলার চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামে বিক্রি হয় বাংলা কলা।
পুরো বছর এসব কলার ফলন পাওয়া গেলেও আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে ফলন মেলে সবচেয়ে বেশি। এ সময় পাওয়া কলাগুলো আকারেও বড় ও পুষ্ট হয়।
বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সৃজনের সময় প্রচুর কলা এই জেলা থেকে সাপ্লাই হয়। প্রতি বুধবার বাজার দিন ১৫/২০ গাড়ি কলা যায় শহরে। এছাড়াও প্রতিদিন বিভিন্ন বাজার থেকে অনেক কলা সারা দেশে যায় এই জেলা থেকে।
কুমিল্লা থেকে খাগড়াছড়ি কলা বাজারে আসা ব্যবসায়ী জামাল হোসেন জানান, সমতল এলাকার কলা আর পাহাড়ের কলার মধ্যে পার্থক্য অনেক। মাটিরাঙ্গা থেকে কলা নিয়ে বাজারে বসে থাকতে হয় না। এগুলো সবাই লুফে নেয়।
সমতল এলাকায় এসব পাহাড়ি কলার চাহিদা বেশি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি বছর কলার দাম বাড়ে। এ বছরও বেড়েছে। প্রতি ছড়া কলা মানভেদে ১০০ থেকে ১ হাজার টাকায় কিনি থাকি। কিছু কিছু এলাকার কলার ছড়া এত বড় হয়, সেগুলো ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনতে হয়।
কলা ব্যবসায়ী আলি মিয়া জানান, এই বাজার থেকে সাপ্তাহিক বাজারের বাইরে থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসেন। প্রতি বাজারে ব্যবসায়ী এবং কৃষকের মাঝে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। এতে করে কৃষকরা বাজারে কলা এনে অপেক্ষা করতে হয়না। খুব সহজে উপযুক্ত দামে কলা বিক্রি করে বাড়ি চলে যেতে পারে।
মাটিরাঙ্গা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো.আমজাদ হোসেন, বলেন,চাপা ও বাংলা কলা পাহাড়ের মাটিতে ভালো হয়। সমতল বা স্যাঁতস্যাতে মাটিতে এগুলোর ফলন হয় না। পাহাড়ের মাটিতে এসব কলা আপনাআপনি বেড়ে ওঠে। তেমন পরিচর্যারও প্রয়োজন পড়ে না। শুধু কলা চারার আশপাশে জঙ্গল পরিষ্কারসহ মরা পাতা ও অতিরিক্ত চারা কেটে ফেলে দিলেই হয়। এটি অনেক লাভজনক ফল। এটি চাষে কোনো কৃষকের লোকসান গুনতে হয়না।