বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ শিক্ষাবিদ শওকত ওসমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ।
১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে তার জন্ম। ছাত্রজীবনেই পিতৃদত্ত নাম শেখ আজিজুর রহমান বাদ দিয়ে সাহিত্যিক হিসেবে শওকত ওসমান নামে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নাসিরুদ্দিন স্বর্ণপদক, মুক্তধারা পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত শওকত ওসমান আজীবন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, মুক্তচিন্তার ধারক।
সুতীক্ষষ্ট সমাজ সচেতনতা আর ব্যঙ্গ-বিদ্রূপে তার গল্প-উপন্যাস প্রখর জীবনবাদী। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- বনি আদম, জননী, ক্রীতদাসের হাসি, চৌরসন্ধি, সমাগম, জাহান্নাম হইতে বিদায়, রাজা উপাখ্যান, রাজসাক্ষী, দুই সৈনিক। গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প, পিঁজরাপোল সাবেকি কাহিনী, প্রান্ত ফলক, জন্ম যদি তব বঙ্গে, মনিব ও তাহার কুকুর।
রচিত নাটকের মধ্যে রয়েছে- আমলার মামলা, তস্কর ও লস্কর, বাগদাদের কবি, পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা। তার আত্মজীবনী রাহনামা, স্মৃতিকথা দুই খণ্ডে মুজিবনগর ও উত্তর পর্ব মুজিবনগর ইতিহাসের বহু ঘটনার দলিল।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তিনি প্রায় পাঁচ বছর কলকাতায় স্বেচ্ছানির্বাসনে ছিলেন। ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ সেরিব্রাল অ্যাটাকে আক্রান্ত হন আমৃত্যু স্বৈরাচার, মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামকারী শওকত ওসমান। ওই বছরই ১৪ মে তিনি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন।
আজ শনিবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে শওকত ওসমানের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়জন করা হয়েছে।
বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আহমদ রফিক এর সভাপতিত্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং শওকত ওসমানের সুযোগ্য সন্তান, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পিতার স্মৃতিচারণ করবেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত থাকবেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী, এ. কে. এম. এনামুল হোক শামীম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ্ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এবং কথা শিল্পী আন্দালিব রাশদী।