ট্রাফিক পুলিশ ট্রাফিক সচেতনতা বাড়াবে, আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। স্বাভাবিকভাবে এমনটা হওয়ার কথা থাকলেও, বরগুনার ট্রাফিক পুলিশের কর্মকাণ্ড ঠিক যেন উল্টো। অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় ট্রাফিক পুলিশ ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ ইজিবাইক সিন্ডিকেট ব্যবসা। এই অভিযোগ খোদ চালকদের। রয়েছে যাত্রী হয়রানীরও অভিযোগ।
একাধিক চালক জানিয়েছেন, সামান্য সুযোগ পেলেই সাধারণ রিকশা ও মিশুক চালকদের হয়রানি করে। চাঁদা দাবি করে। মামলা ঠুকে দেয়াসহ পুলিশী নানা ধরনের হয়রানি করে। অথচ ট্রাফিক পুলিশদের মোটা অংকের টাকা দেয়া অটোরিকশাগুলো ট্রাফিক আইন-শৃঙ্খলাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হরদম চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, মাছ বাজার ব্রিজের উপর থেকে যাত্রী নিয়ে মূল শহর অতিক্রমের পথ আটকে দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ ও ইজিবাইক মালিক শ্রমিক ইউনিয়ন। ট্রাফিকের বদলে ব্রিজ ও বাজারের ভেতরে পাইপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে দাড়িয়ে থাকেন ইজিবাইক ইউনিয়নের পেটোয়া বাহিনী। রিকশা চালকরা ব্রিজের কাছে আসার আগেই তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের। নামিয়ে দেয়া হচ্ছে যাত্রীদের। বাধ্য হয়ে সাধারণ নাগরিকদের রিকশা নিয়ে মাদ্রাসা সড়ক ঘুরে যেতে হচ্ছে বাজারে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে এ অভিযোগের সত্যতা মেলে। এসময় ইজিবাইক মালিক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদ বিশ্বস ও টিএসআই নজরুল ইসলাম দুজন যাত্রীকে হেনস্থা করেন। পরে ইজিবাইক মালিক শ্রমিক ইউনিয়ন, বরগুনা ডিজিটাল মিশুক পরিবহন মালিক শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা ট্রাফিক অফিস বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করেন।
এছাড়াও বরগুনা ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই নজরুল ইসলামের রিরুদ্ধে উগ্র আচরনের অভিযোগ করেছেন ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালকরা। বরগুনা প্রেসক্লাব স্ট্যান্ডে ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘অশ্লীল ভাষাসহ টিএসআই নজরুল ইসলাম গাড়ীতে তালা লাগিয়ে দেয়। নিয়মিত হয়রানী করছে চালক ও যাত্রীদের।’
ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদ বিশ্বাস বলেন ‘জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পৌর মেয়রের দেয়া দায়িত্ব হতেই শহরে মিশুক ও রিকশাগুলোকে ব্রিজ পারাপার হতে বাধা দিচ্ছি।’
ট্রাফিক সাব ইন্সপেক্টর (টিএসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ফরিদ ও তার লোকজন ট্রাফিক পুলিশকে সাহায্য করে। শহরে নিয়ন্ত্রণহীন যানবাহন ও পার্কিংয়ে শৃঙ্খলা রক্ষা করছে।’
বরগুনা ট্রাফিক পুলিশ ইনচার্জ (টিআই) সোহরাব হোসেন বলেন, আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সংকট রয়েছে। শহরকে আমরা আইন ও বিধি মোতাবেক যানযট মুক্ত রাখার চেষ্টা করছি। ‘
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহবায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘নজরুল ইসলামসহ কতিপয় ট্রাফিকের উগ্র আচরণের কারনে সাধারণ চালক ও যাত্রীরা অতিষ্ঠ। প্রায়ই সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি করছে, নামিয়ে দিচ্ছে। যা সম্পূর্ণ জুলুমের পর্যায়। এদের আচরণবিধি সংশোধন ও দুর্নীতি রুখতে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি।’
এদিকে বরগুনার নিশানবাড়িয়া সড়কে বাস মালিক গ্রুপের নৈরাজ্য, পেটোয়া বাহিনী দিয়ে অটো-ইজিবাইক ও থ্রিহুইলার চালক-যাত্রীদের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সন্মেলন করেছে অটো-ইজিবাইক-থ্রিহুলার শ্রমিক ইউনিয়ন।